পর্যাপ্ত পানি পান আপনার শরীরকে সুস্থ ও হাইড্রেটেড রাখে। তবে গরম পানির উপকারিতা বেশি। বিশেষত হজমের উন্নতি করতে এর জুড়ি নেই। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে ১৩০ থেকে ১৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৫৪ থেকে ৭১°সে) মধ্যে গরম পানি পান করা সর্বোত্তম। গরম পানি পানে যেসব উপকার পাওয়া যায়-
তিন-চারবার এক কাপ গরম পানি পান করার পাশাপাশি গরম পানির মৃদু বাষ্পের ওপর গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে বন্ধ সাইনাসগুলো খুলে যেতে থাকে, এমনকি সাইনাসের মাথাব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। সাইনাস এবং গলাজুড়ে শ্লেষ্মা ঝিল্লি রয়েছে। গরম পানি পান শ্লেষ্মা জমার কারণে হওয়া গলাব্যথাকে প্রশমিত করে, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা এবং ক্লান্তি থেকে দ্রুত উপশম করে।
গরম পানি হজম প্রক্রিয়া সচল রাখতে সাহায্য করে। পাকস্থলী এবং অন্ত্রের মধ্য দিয়ে পানি চলাচল করার সঙ্গে সঙ্গে শরীর বর্জ্য দূর করে। গরম পানি পান করা পাচনতন্ত্র সক্রিয় করার ক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকর। গরম পানি আপনার খাওয়া খাবারগুলোকে দ্রবীভূত করতে পারে। ফলে সেই খাবার শরীর সহজেই হজম করতে পারে। গরম পানি অন্ত্রের গতিবিধি এবং গ্যাস নিষ্কাশনে প্রভাব ফেলে।
পর্যাপ্ত পানি না পেলে আপনার স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, মেজাজ হয়ে উঠতে পারে খিটখিটে। গরম পানি চাহিদামূলক কার্যকলাপের সময় মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে বাড়িয়ে তোলে এবং স্নায়ুকে হাইড্রেটেড রাখে।
ডিহাইড্রেশন কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি সাধারণ কারণ। অনেক ক্ষেত্রে পানি পান করা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার এবং প্রতিরোধ করার একটি কার্যকর উপায়। গরম পানি মলকে নরম করতে সাহায্য করে এবং এটি মলদার দিয়ে বেরিয়ে আসতে সহজ করে তোলে। নিয়মিত গরম পানি পান করা আপনার মলত্যাগকে নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে।
ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের সুপারিশ অনুযায়ী, নারীদের প্রতিদিন ২ দশমিক ৩ লিটার এবং পুরুষদের ৩ দশমিক ৩ লিটার পান করা প্রয়োজন। এর মধ্যে যদি ৩ থেকে ৪ গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করা যায়, বিশেষ করে খাওয়ার পর, তাহলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ জ্বর হলে এক কাপ করে গরম পানি পান করে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা কাটিয়ে দিলে জ্বরের প্রকোপ কমে আসবে।
এ ছাড়া গরম পানি রক্তচাপ ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। গরম পানি আপনার রক্ত সঞ্চালন অঙ্গ ধমনি ও শিরাকে প্রসারিত করে কার্যকরভাবে রক্ত বহন করতে সাহায্য করে। শরীরের ডিটক্সিফিকেশন সিস্টেমে সাহায্য করে। গরম পানি রক্তের বর্জ্য পদার্থকে পাতলা করে কিডনিকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। আর্থ্রাইটিস ফাউন্ডেশন অনুসারে, আপনার শরীরকে ফ্লাশ করার জন্য গরম পানি গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে, জয়েন্টগুলোকে ভালোভাবে লুব্রিকেটেড রাখতে এবং গাউট প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
গরম পানি পান করার অভ্যাস করা সহজ। এক কাপ ফুটানো পানিতে লেবু মিশিয়ে খেয়ে আপনার দিন শুরু করার চেষ্টা করুন। রুটিনে স্ট্রেচিংয়ের একটি হালকা সেশন যোগ করুন। দিনটিকে ভালো করার জন্য নিজেকে আরও বেশি উজ্জীবিত করতে গরম পানিই যথেষ্ট।
লেখক: খাদ্য, পথ্য, আকুপ্রেসার বিশেষজ্ঞ
প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
সরাসরি দৈনিক বাংলা থেকে পড়ুন: https://www.dainikbangla.com.bd/health/5282?fbclid=IwAR0F6VMKkiMyMHac7mvY5COyZsjULToASOXiGnAgR0jtmq1Un6xYKajnRDw
অকারণ ওষুধ নির্ভরতা কমিয়ে প্রাকৃতিক সমাধানে ভরসা রাখা যেতে পারে। এই যেমন ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা–সর্দি–কাশিতে সহায়ক হতে পারে ভিটামিন… Read More
কেভাস একটি প্রাকৃতিক পানীয়। এটি শীতে খুবই প্রয়োজনীয় প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ একটি পানীয়, যা ঘরেই তৈরি করে নেওয়া যায়। শীত এলেই আমাদের… Read More
উপোস বা না খেয়ে থাকা। এর ফলে হজমতন্ত্র বিশ্রাম পায়। শরীর সুস্থ থাকে। কিন্তু এই ফাস্টিংয়েরও আছে নিয়ম। তাই ফাস্টিং… Read More
This website uses cookies.