জব বার্ন-আউট কী? জেনে নিন এর লক্ষণ

যতদিন যাচ্ছে, যুগ যত বদলাচ্ছে, ততই বাড়ছে প্রতিযোগিতা, বাড়ছে ব্যস্ততা। বর্তমানে প্রিয়জনের সাথে দেখা হওয়া, কথা বলা সবটাই আটকেছে মোবাইল ফোনে বা ইন্টারনেটে। অতীতের মতো এক জায়গায় বসে আড্ডা দেওয়া, একসাথে বসে খাওয়া-এগুলি আর হয় না বললেই চলে। এখন সবসময়ই মানুষ দৌড়চ্ছে লক্ষ্যের পিছনে, সাফল্যের পিছনে। এরফলে, প্রত্যেক মানুষই কোনও না কোনও সময় ক্লান্তি, একঘেয়েমি, দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্ণতা বা স্ট্রেসের স্বীকার হচ্ছে। আর এগুলিরই চূড়ান্ত পরিণতি হল বার্ন-আউট।

বার্ন-আউট কী ?
বার্ন-আউট হল একটি প্রক্রিয়া। এর ফলে, একজন মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে ক্লান্তি, একঘেয়েমি, দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্ণতা বা স্ট্রেসের লক্ষণগুলো জমা হতে থাকে। সচেতনতাই হল স্ট্রেস থেকে মুক্তির মূল চাবিকাঠি। স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক ভাবে এর থেকে মুক্তির পথ বেছে নেওয়া যায়। কিন্তু, বহু স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে সহ্যক্ষমতা ছাড়িয়ে যায়। এইসময় মানুষ বার্ন-আউটে আক্রান্ত হয়। তখন সবকিছু ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা মাথায় আসে। বার্ন-আউট সবচেয়ে বেশি তাদেরই হয়, যারা নিজের কাজের প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোযোগী ও নিবেদিত। বার্ন-আউটের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল ক্লান্তি, হতাশা, একঘেয়েমি, চাপ, অবসাদগ্রস্ত ইত্যাদি অনুভব করা।

জব বার্ন-আউট কী ?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বার্ন-আউটে তারাই আক্রান্ত হন, যারা নিজের পেশাগত বা ক্যারিয়ারগত সমস্যায় ভোগেন। একেই বলে জব বার্ন-আউট। এক্ষেত্রে এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, একজন ব্যক্তি অনুভব করেন যে, তিনি তাঁর পেশায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, এগিয়ে যেতে পারছেন না, অথবা তিনি নতুন কোনও দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন না, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে পারছেন না, সহকর্মী বা বসের ব্যবহারে মানসিক চাপ বোধ হচ্ছে। তাঁর কাজটিও নিজের কাছে বিরক্তিকর এবং একঘেয়েমি মনে হতে পারে। এইরকম পরিস্থিতিতে আপনি পড়লে ধরে নিতে পারেন আপনি নিজের পেশায় বার্ন-আউট করে গিয়েছেন। চাকরি না পাওয়া এবং সঠিক ক্যারিয়ারের পথ বেছে না নিতে পারায়ও কেউ কেউ বার্ন আউট হয়ে পড়েন। এছাড়াও, এগুলির পাশাপাশি যদি কারও পারবারিক জীবনে অশান্তি হয়, তাহলে বার্ন-আউটের আকার ভয়াবহ হতে পারে ৷

জব বার্ন-আউটের লক্ষণ :
১. কাজের চাপে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচণ্ড ক্লান্ত, বিষণ্ণ, অবসাদগ্রস্ত, হতাশ
২. পেশাগত বা ক্যারিয়ারগত সমস্যা
৩. পেশায় ক্লান্তি, বিরক্তি, একঘেয়েমি
৪. সহকর্মীর সাথে খারাপ ব্যবহার
৫. পেশাগত কোনও সমস্যার সমাধান করতে না পারায়, ভেঙে পড়া
৬. কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে না পারা
৭. কর্মস্থলে জোর করে উপস্থিত থাকা
৮. সহকর্মী বা বসের ব্যবহারে মানসিক চাপ বোধ হওয়া, ইত্যাদি।

এইসব সমস্যার শুরু থেকেই যদি কাছের মানুষ বা বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা হয় তাহলে সহজেই খুব কম সময়ের মধ্যে এর সমাধান হতে পারে ৷ তবে সাধারণত, মানুষ পারিবারিক সমস্যার চেয়ে পেশাগত সমস্যার কারণেই বেশি ভেঙে পড়ে বা অবসাদগ্রস্ত হয় ৷ এক্ষেত্রে, সমস্যার শুরু থেকেই সমাধান করা উচিত ৷ বসের সাথে কথা বলে আপনি আপনার সহায়ক শিডিউল বেছে নিতে পারেন। কাজের বাইরে আপনি যা পছন্দ করেন, তার জন্য সময় বের করে নিতে পারেন। চিকিৎসা করানো ও থেরাপিস্টের কাছে মাঝে মাঝে যেতে পারেন।

 

Share

Recent Posts

মৌসুম পরিবর্তনের সময় ভালো থাকার কৌশল

বসন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে গ্রীষ্মের উত্তাপের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ সময় পোশাক পরিচ্ছেদ থেকে শুরু করে খাবারে কিছুটা পরিবর্তন আসে।… Read More

February 22, 2023

গোল্ডেন মিল্কশেকের উপকারিতা

গোল্ডেন মিল্ক, হলুদের দুধ নামেও পরিচিত। প্রাচীন ভারতবর্ষের একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়, আজ যা পশ্চিমা সংস্কৃতিতে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই উজ্জ্বল… Read More

February 6, 2023

This website uses cookies.