পালিও ডায়েট কী? কিভাবে শুরু করবেন এই ডায়েট?

আজকের দিনে শরীর ঠিক রাখার জন্যে যেমন শরীরচর্চা প্রয়োজন, ঠিক তেমনি দরকার সুষম খাবারের। আর একটা ভালো ডায়েট প্ল্যান আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী শরীরকে ভালো রাখতে পারে। আজকের দিনে নানান দিক বিচার করে অনেক রকম ডায়েট প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এরই মধ্যে একটা ডায়েট প্লান হলো এই পালিও ডায়েট। কি পালিও ডায়েট আসুন জেনে নিই আজকের এই প্রতিবেদনে।

উৎপত্তি, কী এবং কেন : পালিও শব্দটি এসেছে আসলে পালিওলিথিক থেকে। ওই সময় মানুষের আর কি কি খাওয়া দাওয়া করতো বা কি ধরনের খাবার খেতো তা অনুসরণ করেই মূলত এই ডায়েট প্ল্যানে তৈরি করা হয়েছে। শুনতে হাস্যকর হলেও এই ডায়েট এর আসল উদ্দেশ্য হলো অন্য। আসলে আজকের দিনে আমরা আমাদের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে প্রসেসড ফুড নিয়ে থাকি বা খেয়ে থাকি। অতিরিক্ত সুগার বা অতিরিক্ত প্রসেসড ফুড খাওয়ার জন্য যে কারণে ভবিষ্যতে আমাদের শরীরে নানা রকম রোগের সৃষ্টি হয়। শরীরে যাতে প্রসেসড ফুড বেশি না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে মনে করা হয় এই ডায়েট এর উৎপত্তি। যারা প্রসেসড ফুড এর উপর নিজেদের নির্ভরশীলতা কমাতে চান তাদের জন্য বিশেষ করে এই ডায়েট এর জন্ম দেওয়া হয়েছে। ফ্যাট জাতীয় খাবার কে বর্জন করে এমন খাবার এই ডায়েটে নিজের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যাতে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট রয়েছে।সাথে প্রোটিনের পরিমিত আহার একান্ত আবশ্যক। ফলে আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনের পর্যাপ্ত যোগানের জন্য শরীর অনেকটাই ফিট থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ শরীরচর্চার একান্ত প্রয়োজন আছে।

কী কী খাওয়া যাবে না: যদিও এতক্ষণে অনেকেই বুঝতে পারছেন যে এই ডায়েটে কি কি খাওয়া যাবে না বা উচিত নয়, কিন্তু তাও বোঝার স্বার্থে এই ডায়েটে কি কি খাওয়া যাবে না তার একটা ছোট উদাহরণ নিচে দেওয়া হল:
১. সফট ড্রিংকস, চিনি, ক্যান্ডি, পেস্ট্রি বা এই জাতীয় মিষ্টি।
২. ডেয়ারিজাত প্রোডাক্ট
৩. সোয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, গ্রেপসিড তেল
৪. স্যাকারিন, মার্জারিন
৫. যেকোনো ধরনের প্রসেসড ফুড

কী কী খাওয়া যাবে(what to eat or to consume in this diet):

এই ডায়েটে কোন কোন খাবার নিজের জন্য বেছে নেবেন তার একটা নমুনা নিচে দেওয়া হল:
১. বিফ, ভেড়া, মুরগি বা এই জাতীয় প্রোটিন খাদ্য
২. যেকোনো ধরনের সামুদ্রিক বা সমুদ্র জাতীয় খাদ্য, বিশেষত সামুদ্রিক মাছ
৩. ডিম
৪. যেকোনো ধরনের টাটকা এবং তাজা ফল
৫. অলিভ তেল এবং নারকেল তেল
৬. আদা, রসুন, মিষ্টি আলু, বাদাম
৭. গ্রীন টি, কফি
তবে উপরে বর্ণিত এই খাবারগুলো বাদ দিয়ে অনেক খাবার রয়েছে যা এই ডায়েটে নিজের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিশেষজ্ঞরা আধুনিক অনেক খাবার কে এই ডায়েট এর অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

তবে আজকের দিনে অনেকেই এই ডায়েট কে আসলে ডায়েট বলে মেনে নিতে নারাজ। কেননা এই ডায়েট আপনার শরীর বুঝে শুধুমাত্র কতটা কার্বোহাইড্রেট দরকার বা কতটা প্রোটিন, ফ্যাটের দরকার তা বিচার করে না। এর মুখ্য উদ্দেশ্য কেবল আপনার খাদ্য তালিকা থেকে প্রসেসড ফুড সরিয়ে প্রাকৃতিক খাবারকে একত্রিত করা। এই ডায়েট কোন কাগজে কলমে লিখে রাখা কোন বাঁধাধরা ডায়েট নয়। নিজের শরীর বুঝে অন্য যেকোনো ডায়েট এর সাথে এই ডায়েট কে সমান ভাবে মেনে যে কেউ চলতে পারেন।পরিশেষে এটাই বলার যে কেউ যদি এই ডায়েট মেনে চলতে চান, তাহলে অবশ্যই শুরু করার আগে কোন ভাল ডায়েটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করে নিন।

Share

Recent Posts

পেট ভালো রাখতে মেনে চলুন আইবিএস ডায়েট

আপনি যদি ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব, গ্যাসসহ হজমের লক্ষণগুলো কাটিয়ে উঠতে চান, তবে আইবিএস ডায়েট অনুসরণ করার চিন্তা করতে পারেন। কারণ,… Read More

February 3, 2024

এই শীতেও কেন শসা খাবেন?

শসার রয়েছে নানা উপকারিতা। তবে সময় বুঝে খেলে তবেই কাজে লাগবে। না হলে হিতে বিপরীতও হতে পারে। প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের কারণে… Read More

January 24, 2024

উপকারী ভেষজ চা বানাবেন যেভাবে

ভেষজ চা চিত্তাকর্ষক পুষ্টিমান, স্বাস্থ্য-উন্নয়নকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ থেকে তৈরি করা হয়। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং অসুস্থ হওয়ার… Read More

January 20, 2024

This website uses cookies.