সেলুলাইটিস : কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

সেলুলাইটিস : কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

সেলুলাইটিস হল সাধারণ বেদনাদায়ক ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ যা সাধারণত পায়ের নীচের ত্বকে প্রভাব ফেলে। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি মুখ, বাহু বা শরীরের অন্যান্য অংশেও হতে পারে। এক্ষেত্রে, ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের কারণে ত্বক লাল হয়ে যায়, ফুলে ওঠে এবং স্পর্শে বেশ বেদনাদায়ক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। সেলুলাইটিস সাধারণত ত্বকের পৃষ্ঠদেশে বিকাশ করে এবং সংক্রমণটি লিম্ফ নোড এবং রক্ত ​​প্রবাহে ছড়িয়ে পড়ে।

কারণ
সেলুলাইটিস তখনই দেখা দেয়, যখন স্টাফিলোকক্কাস এবং স্ট্রেপ্টোকোকাসের মতো নির্দিষ্ট ধরনের ব্যাকটেরিয়াগুলি কোনও কাটা, আঁচড় বা সার্জিকাল ক্ষতের মাধ্যমে ত্বকের সংস্পর্শে আসে। পশুর কামড়ও সেলুলাইটিসের কারণ হতে পারে।

সেলুলাইটিসের প্রকার
স্তন সেলুলাইটিস – এটি একটি জটিলতা যা স্তন ক্যান্সারের রেডিয়েশন থেরাপির পরে বিকাশ করতে পারে।
পেরিঅরবিটাল সেলুলাইটিস – এই ধরনের সেলুলাইটিস চোখের চারপাশে বিকাশ করে। ফেসিয়াল সেলুলাইটিস – ফেসিয়াল সেলুলাইটিস নাক, গাল এবং চোখের চারপাশে বিকাশ করে।
পেরিয়েনাল সেলুলাইটিস – এটি মলদ্বারে সংক্রমিত হয়।

সেলুলাইটিসের লক্ষণসমূহ
ক) ত্বকে ফোলা এবং লালচে ভাব
খ) নরম ভাব অনুভূত হওয়া এবং ব্যথা
গ) আক্রান্ত জায়গায় গরমভাব
ঘ) জ্বর
ঙ) বমি বমি ভাব
চ) ঠান্ডা ঘাম
ছ) অবসাদ
জ) মাথা ঘোরা
ঝ) পেশী ব্যথা
ঞ) পুঁজযুক্ত ত্বকের ঘা

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে, চিকিৎসকরা সংক্রমিত ত্বকটি পরীক্ষা করে সেলুলাইটিস নির্ণয় করে এবং রোগীর ত্বকে সাম্প্রতিক কোনও আঘাত আছে কি না, তার মেডিকেল অবস্থা রয়েছে এবং রোগী কী কী ওষুধ সেবন করছেন তা জিজ্ঞাসা করে।
এর চিকিৎসা সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে হয়ে থাকে। অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সেলুলাইটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৫ – ১৪ দিনের জন্য নির্ধারিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কয়েকদিন পরেই, উপসর্গগুলি অদৃশ্য হয়ে যায়। যদি সংক্রমণটি গুরুতর হয় তবে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি ইন্ট্রাভেনাসের মাধ্যমে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া, চিকিৎসক বিশ্রামের পরামর্শও দিতে পারেন।

সেলুলাইটিস প্রতিরোধ
ক) সংক্রমণ রোধ করতে পোকামাকড়ের কামড়, আঁচড় থেকে এড়িয়ে চলুন।
খ) ত্বকে ফাটল রোধ করতে ত্বক ময়শ্চারাইজড রাখুন।
গ) স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন।
ঘ) ধূমপান এড়িয়ে চলুন এবং অ্যালকোহল গ্রহণ সীমাবদ্ধ করুন।

এ বিষয়ে পরামশের্র জন্য যোগাযোগ করুন : আলমগীর আলম, 29 বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, তৃতীয় তলা, ঢাকা, কল – 01611010011

সেলুলাইটিস : কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

সেলুলাইটিস : কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

সেলুলাইটিস হল সাধারণ বেদনাদায়ক ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ যা সাধারণত পায়ের নীচের ত্বকে প্রভাব ফেলে। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি মুখ, বাহু বা শরীরের অন্যান্য অংশেও হতে পারে। এক্ষেত্রে, ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের কারণে ত্বক লাল হয়ে যায়, ফুলে ওঠে এবং স্পর্শে বেশ বেদনাদায়ক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। সেলুলাইটিস সাধারণত ত্বকের পৃষ্ঠদেশে বিকাশ করে এবং সংক্রমণটি লিম্ফ নোড এবং রক্ত ​​প্রবাহে ছড়িয়ে পড়ে।

কারণ সেলুলাইটিস তখনই দেখা দেয়, যখন স্টাফিলোকক্কাস এবং স্ট্রেপ্টোকোকাসের মতো নির্দিষ্ট ধরনের ব্যাকটেরিয়াগুলি কোনও কাটা, আঁচড় বা সার্জিকাল ক্ষতের মাধ্যমে ত্বকের সংস্পর্শে আসে। পশুর কামড়ও সেলুলাইটিসের কারণ হতে পারে।

সেলুলাইটিসের প্রকার

স্তন সেলুলাইটিস – এটি একটি জটিলতা যা স্তন ক্যান্সারের রেডিয়েশন থেরাপির পরে বিকাশ করতে পারে।

পেরিঅরবিটাল সেলুলাইটিস – এই ধরনের সেলুলাইটিস চোখের চারপাশে বিকাশ করে।

ফেসিয়াল সেলুলাইটিস – ফেসিয়াল সেলুলাইটিস নাক, গাল এবং চোখের চারপাশে বিকাশ করে।

পেরিয়েনাল সেলুলাইটিস – এটি মলদ্বারে সংক্রমিত হয়।

সেলুলাইটিসের লক্ষণসমূহ
ক) ত্বকে ফোলা এবং লালচে ভাব
খ) নরম ভাব অনুভূত হওয়া এবং ব্যথা
গ) আক্রান্ত জায়গায় গরমভাব
ঘ) জ্বর
ঙ) বমি বমি ভাব
চ) ঠান্ডা ঘাম
ছ) অবসাদ
জ) মাথা ঘোরা
ঝ) পেশী ব্যথা
ঞ) পুঁজযুক্ত ত্বকের ঘা

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা

আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে, চিকিৎসকরা সংক্রমিত ত্বকটি পরীক্ষা করে সেলুলাইটিস নির্ণয় করে এবং রোগীর ত্বকে সাম্প্রতিক কোনও আঘাত আছে কি না, তার মেডিকেল অবস্থা রয়েছে এবং রোগী কী কী ওষুধ সেবন করছেন তা জিজ্ঞাসা করে। এর চিকিৎসা সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে হয়ে থাকে। অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সেলুলাইটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৫ – ১৪ দিনের জন্য নির্ধারিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কয়েকদিন পরেই, উপসর্গগুলি অদৃশ্য হয়ে যায়। যদি সংক্রমণটি গুরুতর হয় তবে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি ইন্ট্রাভেনাসের মাধ্যমে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া, চিকিৎসক বিশ্রামের পরামর্শও দিতে পারেন।

সেলুলাইটিস প্রতিরোধ
ক) সংক্রমণ রোধ করতে পোকামাকড়ের কামড়, আঁচড় থেকে এড়িয়ে চলুন।
খ) ত্বকে ফাটল রোধ করতে ত্বক ময়শ্চারাইজড রাখুন।
গ) স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন।
ঘ) ধূমপান এড়িয়ে চলুন এবং অ্যালকোহল গ্রহণ সীমাবদ্ধ করুন।

 

 

জব বার্ন-আউট কী? জেনে নিন এর লক্ষণ

জব বার্ন-আউট কী? জেনে নিন এর লক্ষণ

 
 

যতদিন যাচ্ছে, যুগ যত বদলাচ্ছে, ততই বাড়ছে প্রতিযোগিতা, বাড়ছে ব্যস্ততা। বর্তমানে প্রিয়জনের সাথে দেখা হওয়া, কথা বলা সবটাই আটকেছে মোবাইল ফোনে বা ইন্টারনেটে। অতীতের মতো এক জায়গায় বসে আড্ডা দেওয়া, একসাথে বসে খাওয়া-এগুলি আর হয় না বললেই চলে। এখন সবসময়ই মানুষ দৌড়চ্ছে লক্ষ্যের পিছনে, সাফল্যের পিছনে। এরফলে, প্রত্যেক মানুষই কোনও না কোনও সময় ক্লান্তি, একঘেয়েমি, দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্ণতা বা স্ট্রেসের স্বীকার হচ্ছে। আর এগুলিরই চূড়ান্ত পরিণতি হল বার্ন-আউট।

বার্ন-আউট কী ?

বার্ন-আউট হল একটি প্রক্রিয়া। এর ফলে, একজন মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে ক্লান্তি, একঘেয়েমি, দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্ণতা বা স্ট্রেসের লক্ষণগুলো জমা হতে থাকে। সচেতনতাই হল স্ট্রেস থেকে মুক্তির মূল চাবিকাঠি। স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক ভাবে এর থেকে মুক্তির পথ বেছে নেওয়া যায়। কিন্তু, বহু স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে সহ্যক্ষমতা ছাড়িয়ে যায়। এইসময় মানুষ বার্ন-আউটে আক্রান্ত হয়। তখন সবকিছু ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা মাথায় আসে। বার্ন-আউট সবচেয়ে বেশি তাদেরই হয়, যারা নিজের কাজের প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোযোগী ও নিবেদিত। বার্ন-আউটের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল ক্লান্তি, হতাশা, একঘেয়েমি, চাপ, অবসাদগ্রস্ত ইত্যাদি অনুভব করা।

জব বার্ন-আউট কী ?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বার্ন-আউটে তারাই আক্রান্ত হন, যারা নিজের পেশাগত বা ক্যারিয়ারগত সমস্যায় ভোগেন। একেই বলে জব বার্ন-আউট। এক্ষেত্রে এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, একজন ব্যক্তি অনুভব করেন যে, তিনি তাঁর পেশায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, এগিয়ে যেতে পারছেন না, অথবা তিনি নতুন কোনও দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন না, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে পারছেন না, সহকর্মী বা বসের ব্যবহারে মানসিক চাপ বোধ হচ্ছে। তাঁর কাজটিও নিজের কাছে বিরক্তিকর এবং একঘেয়েমি মনে হতে পারে। এইরকম পরিস্থিতিতে আপনি পড়লে ধরে নিতে পারেন আপনি নিজের পেশায় বার্ন-আউট করে গিয়েছেন। চাকরি না পাওয়া এবং সঠিক ক্যারিয়ারের পথ বেছে না নিতে পারায়ও কেউ কেউ বার্ন আউট হয়ে পড়েন। এছাড়াও, এগুলির পাশাপাশি যদি কারও পারবারিক জীবনে অশান্তি হয়, তাহলে বার্ন-আউটের আকার ভয়াবহ হতে পারে ৷

জব বার্ন-আউটের লক্ষণ :
১. কাজের চাপে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচণ্ড ক্লান্ত, বিষণ্ণ, অবসাদগ্রস্ত, হতাশ
২. পেশাগত বা ক্যারিয়ারগত সমস্যা
৩. পেশায় ক্লান্তি, বিরক্তি, একঘেয়েমি
৪. সহকর্মীর সাথে খারাপ ব্যবহার
৫. পেশাগত কোনও সমস্যার সমাধান করতে না পারায়, ভেঙে পড়া
৬. কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে না পারা
৭. কর্মস্থলে জোর করে উপস্থিত থাকা
৮. সহকর্মী বা বসের ব্যবহারে মানসিক চাপ বোধ হওয়া, ইত্যাদি।

এইসব সমস্যার শুরু থেকেই যদি কাছের মানুষ বা বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা হয় তাহলে সহজেই খুব কম সময়ের মধ্যে এর সমাধান হতে পারে ৷ তবে সাধারণত, মানুষ পারিবারিক সমস্যার চেয়ে পেশাগত সমস্যার কারণেই বেশি ভেঙে পড়ে বা অবসাদগ্রস্ত হয় ৷ এক্ষেত্রে, সমস্যার শুরু থেকেই সমাধান করা উচিত ৷ বসের সাথে কথা বলে আপনি আপনার সহায়ক শিডিউল বেছে নিতে পারেন। কাজের বাইরে আপনি যা পছন্দ করেন, তার জন্য সময় বের করে নিতে পারেন। চিকিৎসা করানো ও থেরাপিস্টের কাছে মাঝে মাঝে যেতে পারেন।

পানের আশ্চর্য গুণ

পানের আশ্চর্য গুণ

রসিয়ে রসিয়ে মনের আনন্দে পান খান অনেকেই। কেউ কেউ নিয়মিত খেয়ে থাকেন আবার কেউ মাঝে মধ্যে খান। অনেকে আবার মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখার জন্য পান চিবিয়ে থাকেন। এই পানের সঙ্গে সুপারি যেমন থাকে তেমনি থাকে অন্যান্য উপাদেয় সামগ্রী। পান তো স্বাদ বা মজার জন্য খেলেন, জানেন কি এর কত উপকার?

দেহের ক্লান্তি ও স্নায়ুবিক দুর্বলতা কাটানোর জন্য কয়েকটা পান পাতার রস এক চামচ মধু দিয়ে খেলে নাকি তা টনিকের মতো কাজ করে। খাবার হজম হতে সাহায্য করে। পান পাতা সেবনে দেহের চর্বি বা মেদ এবং ওজনও কমে বলে জানা গেছে।

এবার জেনে নিন পান খাওয়ার উল্লেখযোগ্য কিছু উপকারিতা-

হজমে সাহায্য করে
পান খেলে লালাগ্রন্থির নিঃসরণ বেড়ে যায়। এ লালার কারণেই হজমের প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয়। লালার মধ্যে থাকা বিভিন্ন এনজাইম বা উৎসেচক খাদ্যকে কণায় ভাঙতে সাহায্য করে যার ফলে হজম ভালো হয়। শুধু পান পাতা চিবিয়ে খেলেও এ উপকার পাওয়া যায়।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
খাবার গ্রহণের পর তার কণা মুখের ভেতরে, দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকে। এগুলো ব্যাকটেরিয়া পচিয়ে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। পান খেলে তার রস জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে এসব ব্যাকটেরিয়াকে জন্মাতে দেয় না। যার ফলে মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং দুর্গন্ধমুক্ত হয়।

যৌন শক্তি বাড়ায়
এটি একটি পুরনো প্রথা তবে কার্যকর। পানের রস যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে। আগেকার দিনে নববিবাহিতরা বেশি বেশি পান খেতেন।

গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করে
পান খেলে পেটে বায়ু জমে কম। যার ফলে গ্যাস্ট্রিক ও আলসার সৃষ্টির সুযোগ পায় না। পানের রস হজমে সাহায্য করায় তা পেটে বদ গ্যাস তৈরিও রোধ করে। যার ফলে পেট ফাঁপে না।

জন্মরোধ করে
পান গাছের শিকড় বেটে রস করে খেলে ছেলেপুলে হয় না। জন্ম নিরোধক বড়ি না খেয়েও এটা জন্মনিয়ন্ত্রণে সেবন করা যায়। বিভিন্ন দেশের গবেষণায় এর প্রমাণও মিলেছে।

উঁকুন মারে
মাথায় উঁকুন হলে গোসলের কিছুক্ষণ আগে পান পাতার রস মাথায় লাগিয়ে বসে থাকলে উঁকুন মারা যায়। এ কাজে ঝাল জাতীয় পান হলে ভালো হয়।

ফোঁড়া ফাটায়
পান পাতার চকচকে সবুজ পিঠে ঘি মাখিয়ে একটু সেঁক দিয়ে গরম করে ফোঁড়ার ওপর লাগিয়ে দিলে দ্রুত ফোঁড়া পেকে ফেটে যায়। আবার পাতার উল্টো পিঠে ঘি মাখিয়ে একইভাবে বসিয়ে রাখলে তা পুঁজ টেনে বের করে আনে। ঘিয়ের বদলে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করেও একই ফল পাওয়া যায়।

চর্মরোগ সারায়
দেহের কোথাও চুলকানি বা পাঁচড়া হলে সেখানে পান পাতার রস লাগিয়ে দিলে কয়েক দিনের মধ্যে তা ভাল হয়ে যায়।

মুখ ও দাঁতের উপকার করে
দাঁতের মাঢ়ি দূষিত হলে ফুলে যায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে পানের রসের সঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে কুলকুলি করলে ধীরে ধীরে ক্ষত শুকিয়ে যায়। মুখগহ্বরে কোনো ক্ষত হলে পানের রসে তার উপশম হয়। পানের রসে এসকরবিক এসিড আছে যা একটি চমৎকার এন্টিঅক্সিডেন্ট। এটা মুখের ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে।

নখের ব্যথা সারায়
অনেক সময় নখের কোণায় ব্যথা হয়। এ অবস্থায় সেখানে কয়েক ফোঁটা পানের রস দিলে ব্যথা চলে যায়।

আঁচিল দূর করে
শরীরে আঁচিল হলে তার উপর কয়েক দিন পানের রস লাগান। এতে তা ধীরে ধীরে খসে পড়বে আঁচিল এবং ওই জায়গায় আর তৈরিও হবে না।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
পান রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলে গবেষণায় জানা গেছে। ফলে পানে রয়েছে ডায়াবেটিস প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য।

সর্দি বের করে
বুকের ভেতর কফ/সর্দি বা শ্লেষ্মা জমা হলে তা বের করতে পানের রস কার্যকর। এ ক্ষেত্রে পানের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে কয়েক দিন খেতে হবে। এতে বুকে জমা কফ বেরিয়ে যাবে।

মাথা ব্যথা দূর করে
মাথা ব্যথা হলে কপালে পানের রস লেপে দিলে দ্রুত মাথা ব্যথা কমে যায়।

ক্ষত ও ব্যথা সারায়
পানের বেদনানাশক ও ক্ষত সারানোর ক্ষমতা আছে। কোথাও ব্যথা হলে পান পাতা বেটে মলমের মতো সেখানে লেপে দিলে দ্রুত ব্যথা কমে। দেহের ভেতরে কোথাও ব্যথা হলে পানের রস করে পানিতে মিশিয়ে তা শরবতের মতো খেতে হবে। শুধু পান পাতা চিবিয়ে এর রস খেলেও এ উপকার মিলবে।

ঠাণ্ডা লাগা দূর করে
ঠাণ্ডা লাগা সারাতে পান চমৎকার কাজ করে। ঠাণ্ডা লাগলে সর্দি কাশিও হয়। এক্ষেত্রে পানপাতা গরম পানি দিয়ে ছেঁচে রস বের করতে হবে। এ রসের সঙ্গে এক চিমটি গোলমরিচের গুঁড়া ও আদার রস মিশিয়ে খেতে হবে।

ক্ষুধা বৃদ্ধি করে
পাকস্থলী গড়বড় হলে সবই উল্টে যায়। খিদেও লাগে না। পাকস্থলীতে অম্লমান বা পিএইচের মাত্রা স্বাভাবিক না থাকলেই এরূপ হয়। পান তা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। শুধু পান পাতা চিবিয়ে খেলেও ক্ষুধা বাড়বে।

এন্টিসেপটিকের কাজ করে
কোথাও কেটে গেলে দ্রুত সেখানে পানের রস লাগিয়ে দিলে জীবাণু সংক্রমণের ভয় থাকে না। পান পাতা পলিফেনল বিশেষত চাভিকল নামক রাসায়নিক উপাদানে পূর্ণ। এটা জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে। এ ছাড়া সেখানে ফোলাও বন্ধ করে, ব্যথার উপশম করে।

পিঠে ব্যথার উপশম করে
নানা কারণে পিঠে ব্যথা হতে পারে। শোয়া থেকেও হয়। বয়স্কদের এ সমস্যা প্রায়ই দেখা দেয়। মাংসপেশির টান থেকেও এরূপ ব্যথা হতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যথা জায়গায় পান পাতা দিয়ে সেঁক দিলে উপকার মেলে। এ ছাড়া পান পাতার রসের সঙ্গে নারিকেল তেল মিশিয়ে ব্যথা জায়গায় মালিশ করলে ব্যথা কমে।

মূত্র স্বল্পতা ও মূত্রকৃচ্ছতার উপশম করে
যাদের কম প্রস্রাব হয় বা প্রস্রাব করতে গেলে কষ্ট হয় তারা পান পাতার রস সেবন করে উপকার পেতে পারেন। এক্ষেত্রে ১টি পান পাতা ছেঁচে রস করে নিতে হবে। সেই রস একটু দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে উপকার হবে। এতে দেহে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়বে ও মূত্রকৃচ্ছতা চলে যাবে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
পান পাতায় আছে চমৎকার এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় ও দেহে ক্যান্সার সৃষ্টি প্রতিরোধ করে। এজন্য রোজ ১০-১২টি পান পাতা পানিতে ৫ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। এরপর তা নামিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। একটু ঠাণ্ডা হলে তাতে কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে কুসুম গরম থাকতেই পান করুন। রোজ এটি খেতে পারলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।

শিশুদের পেট ব্যথা কমায়
পেটে ব্যথা হলে ছোট্ট শিশুরা কাঁদতে থাকে। বড় শিশুরা পেট চেপে ধরে কাতরাতে থাকে। এ অবস্থায় পান পাতার চকচকে পিঠে নারিকেল তেল মাখিয়ে তা গরম করে সেই পাতা পেটের ওপর চেপে ধরে সেঁক দিতে হবে। ৩-৪ মিনিট পর পর এভাবে কয়েকবার সেঁক দিলে পেটে ব্যথা কমে যাবে। খেয়াল রাখতে হবে সেঁকের সময় তাপটা যেন বেশি না হয়।

পোড়া সারায়
পুড়ে গেলে সেখানে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া হয়। পোড়া জায়গায় পান পাতা বেটে তার সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে প্রলেপ দিলে যন্ত্রণার উপশম হবে ও পোড়া জায়গা শুকিয়ে যাবে।

তবে পানের কিছু দোষও রয়েছে। পানের নতুন পাতা শ্লেষ্মা বাড়ায়। পান হজম করে বটে তবে বেশি খেলে অজীর্ণ হয়। পানের বোঁটা ও শিরার রস ইন্দ্রিয়ের শক্তি কমিয়ে দেয়। তাই পানের বোঁটা খাওয়া উচিত নয়। যারা রুগ্ন, দুর্বল, ক্ষীণ স্বাস্থ্যের তারা পান খাবেন না। মূর্চ্ছা রোগী, যক্ষ্মা রোগী ও যাদের চোখ উঠেছে তারও পান খাবেন না।

আলমগীর আলম
ন্যাচারোপ্যাথি ও আকুপ্রেসার বিষেশজ্ঞ
২৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, তৃতীয় তলা, ঢাকা
01611010011