by Rabiul Islam | Jan 25, 2021 | Case Study
পেটে গ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ, টিউমার ও প্রোস্টেটজনিত সমস্যা থেকে যেভাবে মুক্ত হলেন মি. মাহ্বুবুর রহমান।
“আমার নাম মাহবুবুর রহমান, পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আমি প্রাকৃতিক নিরাময়ে আলমগীর ভাইয়ের সাথে পরিচিত হই; বেশ কিছু দিন আগে। আমার বিভিন্ন রকম সমস্যা ছিল; শারিরীক সমস্যা। প্রথমত, গ্যাস্টিক ছিল মারত্মক রকমের। বলতে গেলে কিছুই খেতে পারতাম না, যা খেতাম সব কিছুতেই আমার গ্যাস তৈরী হতো। দ্বিতীয়ত সমস্যা ছিল, আমার প্রোস্টেটে সমস্যা ছিল। প্রস্রাব ধরলে আমি প্রস্রাবখানায় যাওয়ার আগেই দু-এক ফোঁটা পরে যেত। আমার শরীরে একটা টিউমার ছিল; ব্লাড প্রেশার ছিল। এই ধরণের সমস্যা নিয়েই মূলত আমি আসি আলমগীর ভাইয়ের এখানে। আলমগীর ভাই আমাকে কতগুলো পয়েন্ট দেখিয়ে দেয়, আকুপ্রেসারের পয়েন্ট দেখিয়ে দেয় এবং ম্যাকানিজম বলে যে, কি কারণে এই সমস্ত পয়েন্টে চাপ দিলে এই রোগগুলো ভালো হয়ে যাবে। আমি চিকিৎসা বলতে মূলত এই পরামর্শটাই নিয়েছি। এবং আমাকে পয়েন্টগুলো দেখিয়ে দিছে এবং আমি বাসাতে এগুলো নিজে নিজে ………”
মাহ্বুবুর রহমান
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী
বিস্তারিত: https://youtu.be/oF2ixLTNOfM
by alamgir alam | Oct 29, 2020 | রোগ-ব্যাধি
পরিপাকতন্ত্রের সাথে যুক্ত এই ডাইভার্টিকিউলিটিস । এটি পরিপাকতন্ত্রের প্রাচীরে হয়। এগুলো সাধারণত কোলন বা বৃহদন্ত্রের নীচের দিকে দেখা যায়। কখনোও কখনোও এক বা একাধিক থলিতে ইনফেকশন, ইনফ্লামেশন বা জ্বালা হয়। এর ফলে তলপেটে খুব ব্যাথা, জ্বর, বমিভাব ও মলত্যাগের ক্ষেত্রে পরিবর্তন দেখা দেয়।
বর্তমানে ডাইভার্টিকিউলিটিস একটি খুব সাধারণ রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি হজম সংক্রান্ত একটি সমস্যা যা কোলনকে প্রভাবিত করে (বৃহদন্ত্র)। এই রোগে, বৃহদন্ত্রের প্রাচীরে ছোটো ছোটো পিন্ড তৈরি হয়। এই ডাইভার্টিকুলাগুলিতে প্রদাহের সৃষ্টি হলে তখন তাকে ডাইভার্টিকিউলিটিস বলে।
ডাইভার্টিকিউলিটিস মূলত কোলনের নীচের বাম প্রান্তে হয়। এটি পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই হতে পারে। বিশেষত ৪০ বছর বয়সের পরে এই রোগ দেখা দেয়। গবেষকদের মতে, 8সাধারণত ৮০ শতাংশ মানুষ ডাইভার্টিকিউলিটিসের কোনও লক্ষণ অনুভব করেন না। যখন এই ডাইভার্টিকুলাগুলি তৈরি হতে থাকে তখন কোনও উপসর্গ বোঝা যায় না। প্রাথমিক অবস্থায় নিয়মিত সঠিকভাবে জীবনযাপন করলে ও সঠিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করলে এটি সারানো যায়। তবে এই রোগ মারাত্নক রুপ ধারণ করলে অবশ্যই সার্জারির দিকে এগোতে হয়।
ডাইভার্টিকিউলিটিসের লক্ষণ ও উপসর্গ : ডাইভার্টিকিউলিটিসের লক্ষণগুলি হালকা থেকে গুরুতর হয়। রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে হঠাৎ বা বেশ কয়েকটি দিনে এই রোগের বৃদ্ধি হতে পারে।
১) পেট ব্যাথা, বিশেষ করে পেটের বাম দিকে ব্যাথা
২) বমি বমি ভাব
৩) কোষ্ঠকাঠিন্যতা
৪) মলত্যাগে রক্ত পড়া
৫) জ্বর
৬) ডায়রিয়া
৭) ক্লান্তিবোধ করা
এই রোগের কারণ :
চিকিৎসকদের মতে, কোলনের ভেতরের প্রাচীরের কোনও দুর্বল অংশে চাপ পড়লে সেখানে ডাইভার্টিকিউলিটিসের সৃষ্টি হয়। সাধারণত, ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার মলত্যাগে সহায়তা করে। আর, খাবারে আঁশের পরিমাণ কম থাকলে মলত্যাগে সমস্যা দেখা দেয়। মলত্যাগে দীর্ঘসময় লাগে যার ফলে কোলনে চাপ পড়ে। আর কোলনে চাপ পড়া মাত্র কোলনের ভিতরের দেয়ালের দুর্বল অংশে ডাইভার্টিকিউলিটিসের সৃষ্টি হয়।
ডাইভার্টিকিউলিটিসের মূল কারণ এখনও অজানা,কিন্তু এর পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে যা ডাইভার্টিকিউলিটিস হতে সাহায্য করে। কারণগুলি হল-
১) কম ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে
২) রেড মিট
৩) শরীরচর্চা না করলে
৪) ধূমপান
৫) ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি
৬) জীনগত
৭) দীর্ঘদিন ধরে কোনও যণ্ত্রণানাশক ওষুধ খেলে
৮) কোষ্ঠকাঠিন্যের ধাত
৯) ওজন বেশি বা শরীরে মেদ বৃদ্ধির কারণে
রোগনির্ণয় :
ডাইভার্টিকিউলিটিস হলে রোগ শনাক্ত করতে,একজন চিকিত্সক রোগীর কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে তা জিজ্ঞাসা করেন এবং দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা নিয়েও রোগীকে প্রশ্ন করেন। রোগ শনাক্ত করতে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। চিকিৎসকরা মলদ্বার পরীক্ষার সাথে সাথে সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করে থাকেন।
পরীক্ষাগুলি এক বা একাধিক হতে পারে-
১) কোলোনোস্কোপির মাধ্যমে চিকিৎসকরা অন্ত্রের ভেতরের সমস্যাগুলি নির্ধারণ করেন। ২) কতটা সংক্রমণ হয়েছে তা দেখতে মূত্র এবং মল পরীক্ষা করা হয়।
৩) প্রদাহ বা কিডনিজনিত সমস্যার দেখার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়।
৪) এম আর আই,সিটি স্ক্যান,আল্ট্রাসাউন্ড এবং এক্স-রে করা হয়।
৫) মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রেগনেন্সি টেস্ট কর হয়।
এই রোগের চিকিৎসা :
রোগ নির্ণয়ের পরে,একজন চিকিত্সক রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে চিকিত্সা ব্যবস্থা করেন। কিছু প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যায়। যেমন-ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া,প্রয়োজনমতো জল পান করা,নিয়মিত শরীর চর্চা করা। এগুলির ফলে অন্ত্রের ক্রিয়া উন্নত করা যায়। এছাড়া,চিকিত্সার অন্যান্য পদ্ধতিগুলির মধ্যে রয়েছে:
১) মেট্রোনিডাজল এবং অ্যামোক্সিসিলিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ
২) সংক্রমিত ডাইভার্টিকুলা অপসারণের জন্য সার্জারি
ডাইভার্টিকিউলিটিস প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে যে খাবারগুলি
আগেই আলোচনা করা হয়েছে,খাবারে যদি উচ্চ ফাইবারযুক্ত থাকে তাহলে ডাইভার্টিকিউলিটিস হতে বাধা দিতে পারে। এই রোগ প্রতিরোধের জন্য যে খাবারগুলি সবচেয়ে উপযুক্ত তা দেওয়া হল-
১) মটরশুটি,বিনস
২) ব্রাউন রাইস
৩) আপেল এবং নাশপাতির মতো উচ্চ ফাইবারযুক্ত ফল
৪) শাকসবজি
৫) মাছ,ডিম
৬) ওটস
এই রোগে যে খাবারগুলি এড়িয়ে যাবেন কিছু নির্দিষ্ট খাবার রয়েছে যা ডাইভার্টিকিউলিটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে এড়ানো উচিত। এই ধরনের খাবারগুলি হল-
১) রেড মিট
২) পপকর্ন
৩) বাদাম
by alamgir alam | Oct 29, 2020 | রোগ-ব্যাধি
যতদিন যাচ্ছে, যুগ যত বদলাচ্ছে, ততই বাড়ছে প্রতিযোগিতা, বাড়ছে ব্যস্ততা। বর্তমানে প্রিয়জনের সাথে দেখা হওয়া, কথা বলা সবটাই আটকেছে মোবাইল ফোনে বা ইন্টারনেটে। অতীতের মতো এক জায়গায় বসে আড্ডা দেওয়া, একসাথে বসে খাওয়া-এগুলি আর হয় না বললেই চলে। এখন সবসময়ই মানুষ দৌড়চ্ছে লক্ষ্যের পিছনে, সাফল্যের পিছনে। এরফলে, প্রত্যেক মানুষই কোনও না কোনও সময় ক্লান্তি, একঘেয়েমি, দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্ণতা বা স্ট্রেসের স্বীকার হচ্ছে। আর এগুলিরই চূড়ান্ত পরিণতি হল বার্ন-আউট।
বার্ন-আউট কী ?
বার্ন-আউট হল একটি প্রক্রিয়া। এর ফলে, একজন মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে ক্লান্তি, একঘেয়েমি, দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্ণতা বা স্ট্রেসের লক্ষণগুলো জমা হতে থাকে। সচেতনতাই হল স্ট্রেস থেকে মুক্তির মূল চাবিকাঠি। স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক ভাবে এর থেকে মুক্তির পথ বেছে নেওয়া যায়। কিন্তু, বহু স্ট্রেসে আক্রান্ত হলে সহ্যক্ষমতা ছাড়িয়ে যায়। এইসময় মানুষ বার্ন-আউটে আক্রান্ত হয়। তখন সবকিছু ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা মাথায় আসে। বার্ন-আউট সবচেয়ে বেশি তাদেরই হয়, যারা নিজের কাজের প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোযোগী ও নিবেদিত। বার্ন-আউটের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল ক্লান্তি, হতাশা, একঘেয়েমি, চাপ, অবসাদগ্রস্ত ইত্যাদি অনুভব করা।
জব বার্ন-আউট কী ?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বার্ন-আউটে তারাই আক্রান্ত হন, যারা নিজের পেশাগত বা ক্যারিয়ারগত সমস্যায় ভোগেন। একেই বলে জব বার্ন-আউট। এক্ষেত্রে এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, একজন ব্যক্তি অনুভব করেন যে, তিনি তাঁর পেশায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, এগিয়ে যেতে পারছেন না, অথবা তিনি নতুন কোনও দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন না, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে পারছেন না, সহকর্মী বা বসের ব্যবহারে মানসিক চাপ বোধ হচ্ছে। তাঁর কাজটিও নিজের কাছে বিরক্তিকর এবং একঘেয়েমি মনে হতে পারে। এইরকম পরিস্থিতিতে আপনি পড়লে ধরে নিতে পারেন আপনি নিজের পেশায় বার্ন-আউট করে গিয়েছেন। চাকরি না পাওয়া এবং সঠিক ক্যারিয়ারের পথ বেছে না নিতে পারায়ও কেউ কেউ বার্ন আউট হয়ে পড়েন। এছাড়াও, এগুলির পাশাপাশি যদি কারও পারবারিক জীবনে অশান্তি হয়, তাহলে বার্ন-আউটের আকার ভয়াবহ হতে পারে ৷
জব বার্ন-আউটের লক্ষণ :
১. কাজের চাপে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচণ্ড ক্লান্ত, বিষণ্ণ, অবসাদগ্রস্ত, হতাশ
২. পেশাগত বা ক্যারিয়ারগত সমস্যা
৩. পেশায় ক্লান্তি, বিরক্তি, একঘেয়েমি
৪. সহকর্মীর সাথে খারাপ ব্যবহার
৫. পেশাগত কোনও সমস্যার সমাধান করতে না পারায়, ভেঙে পড়া
৬. কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে না পারা
৭. কর্মস্থলে জোর করে উপস্থিত থাকা
৮. সহকর্মী বা বসের ব্যবহারে মানসিক চাপ বোধ হওয়া, ইত্যাদি।
এইসব সমস্যার শুরু থেকেই যদি কাছের মানুষ বা বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা হয় তাহলে সহজেই খুব কম সময়ের মধ্যে এর সমাধান হতে পারে ৷ তবে সাধারণত, মানুষ পারিবারিক সমস্যার চেয়ে পেশাগত সমস্যার কারণেই বেশি ভেঙে পড়ে বা অবসাদগ্রস্ত হয় ৷ এক্ষেত্রে, সমস্যার শুরু থেকেই সমাধান করা উচিত ৷ বসের সাথে কথা বলে আপনি আপনার সহায়ক শিডিউল বেছে নিতে পারেন। কাজের বাইরে আপনি যা পছন্দ করেন, তার জন্য সময় বের করে নিতে পারেন। চিকিৎসা করানো ও থেরাপিস্টের কাছে মাঝে মাঝে যেতে পারেন।
by alamgir alam | Oct 29, 2020 | রোগ-ব্যাধি
অতিক্রান্ত হচ্ছে সময়। এগোচ্ছে মানব সভ্যতা। শিক্ষা সংস্কৃতি থেকে প্রযুক্তিগত দিক, কালের বিবর্তনে পরিবর্তিত হচ্ছে সবকিছুর। বর্তমান মানব সভ্যতার এই উন্নতি অনেকাংশে এগিয়ে দিচ্ছে সারা বিশ্বকে। কিন্তু সবকিছুর উন্নতি হলেও মানুষের দৈহিক রোগ কিন্তু পিছু ছাড়ছে না। মনুষ্যজাতির অগ্রসরে কোথাও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিভিন্ন শারীরিক রোগগুলি। সম্পর্ক, কাজকর্ম ও সামাজিক মেলামেশার উপরেও প্রভাবিত হচ্ছে শারীরিক রোগ। আজ আমরা এরকম একটি রোগ সম্পর্কে আলোচনা করব। যার নাম ‘অ্যাসপারগার সিন্ড্রোম’।
অস্ট্রীয় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ হ্যান্স অ্যাসপারগার এর নামানুসারে এই লক্ষণসমূহের নামকরণ হয়েছে। এটি একটি স্নায়ুগত বিশৃঙ্খলাজনিত রোগ লক্ষণ সমষ্টি। যাকে ইংরেজিতে Autism Spectrum Disorder বা ASDs বলে। অ্যাসপারগার সিন্ড্রোম হল অর্টিজম স্পেক্ট্রামের অংশ। যাকে বলে ‘নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার’। অর্টিজম স্পেকট্রাম থাকার কোন দৃষ্টিগোচর বৈশিষ্ট্য নেই তাই তাকে “গোপন অক্ষমতা” বলা হয়। এরা সাধারণত প্রবল উদ্দীপকের অনুভূতি সহ্য করতে পারে না এবং প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে পড়ে। বাস্তব জীবনে চলবার জন্য প্রয়োজনীয় নানা দক্ষতার অভাব দেখা যায়।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতবর্ষের তুলনায় বাইরের দেশে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের ২০১৪ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী প্রতি ৬৮ জন নবজাতকের মধ্যে ১জন অ্যাসপারগার সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১.১ শতাংশ মানুষের অটিজম স্পেকট্রামে রয়েছে। আধুনিক গবেষণা অনুযায়ী উল্লেখ্য, প্রতি হাজারে ১-২ জনের অর্টিজম এবং এক হাজারে ৬ জন এ এস ডি(ASDs) রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
রোগের কারণ
এই রোগের প্রকৃত কারণ কিন্তু এখনও পর্যন্ত অজ্ঞাত। তবে, মেয়েদের তুলনায় পুরুষদের এই রোগ বেশি হয়। তবে প্রাথমিকভাবে বলা যায়-
১) জিনগত, পরিবেশগত ও পরিবার গত কারণে এগুলি দেখা দেয়।
২) গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত নেশা করা বা রাসায়নিক বিক্রিয়ার সম্মুখীন হওয়া বা ভাইরাসঘটিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণেও হতে পারে।
৩) সেবন করা কিছু ওষুধ থেকেও এই রোগ হতে পারে। যেমন,ভ্যাল্প্রোইক অ্যাসিড এবং থ্যালিডোমাইড (এটি গর্ভাবস্থায় খাওয়া হয়)।
৪) বিলম্বিত গর্ভধারণের ফলেও শিশুর অ্যাসপারগার সিন্ড্রোম হওয়ার বিপদ বেড়ে যায়। ৫) বয়ঃবৃদ্ধির সময়ে সামাজিক সংকেত বুঝতে না পারার ফলে বা অন্যের সাথে আলাপচারিতায় জড়তা হওয়ার ফলে জন্মানো হতাশা, উদ্বিগ্নতা ও কি করতে হবে তা বুঝতে না পারার ক্ষমতা থেকেও এই লক্ষণ সমষ্টি প্রকাশ পায়।
লক্ষণ
এই রোগের যে লক্ষণগুলি দেখে বোঝা যায় কোনও শিশু বা ব্যাক্তি অ্যাসপারগারে আক্রান্ত, সেগুলি হল-
১) জন্মের পর প্রথম বছর বয়সের মধ্যে শিশুদের এই ধরনের রোগ লক্ষণ সমষ্টি প্রকাশ পেয়ে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। সঠিক বা প্রত্যাশিত সামাজিক আচরণ করতে এরা ব্যর্থ হয়। অন্যের মনের অবস্থা বোঝার ক্ষমতার অভাব দেখা দেয়।
২) অস্বাভাবিক কথাবার্তা বলা ও কোনও কিছুর প্রতি নিবিড়ভাবে আগ্রহের অভাব।
৩) একটি জিনিস বা ধারনাকে বোঝানোর জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বর্ণনা প্রদান করা।
৪) ক্ষেত্র অনুযায়ী স্বরের উচ্চতা নীচতা ব্যবহারের ও মুখের ভাব-ভঙ্গি বোঝা বা বোঝানোর অভাব।
৫) চোখ বা মুখের দিকে চেয়ে কথা না বলা।
৬) একই ধরনের বাধা দেওয়া কাজ বারংবার করা বা একই কথা বারবার বলা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ।
৭) এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শিখন-এর সমস্যা থাকতে পারে। সুনির্দিষ্ট কিছু কাজ কিংবা বিষয়ে প্রবল আকর্ষণ থাকতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রখর ও দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিশক্তি থাকতে পারে। যেমন- এই ধরনের শিশুর কোনো যান্ত্রীক মডেলের সম্পর্কে আগ্রহ থাকলে সে হয়ত অগুনতি যান্ত্রীক মডেলের নাম্বার এবং বিবরণ সহজেই শিখে ফেলতে পারে। কিন্তু অন্য অনেক সাধারণ কাজ এরা করে-উঠতে পারে না।
৮)জীবনযাত্রার বা পড়াশোনার পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটানো হলে অ্যাসপারগারে আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রবল সমস্যা হয় এবং শিক্ষার্থীর বিকাশেও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উল্লেখ্য, অ্যাসপারগারে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অনেক সময় আক্রমণাত্মক বলে মনে করা হয়ে থাকে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাসপারগারের লক্ষণে আক্রান্ত মানুষ সাধারণতঃ অন্যকে আক্রমণ করেনা, বরং অন্যের সামাজিক অত্যাচার সহ্য করে থাকে।
চিকিৎসা
এই রোগের তেমন কোনও ঔষধগত (Medicinal Treatment) চিকিৎসা নেই। তবে এই রোগের উদ্বিগ্নতা কমানোর ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে। দৈনিক ভিটামিনযুক্ত খাবার ও মৎস্য তেল (Fish oil) খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়া আকুপাংচার (Acupunctere) , স্পীচ থেরাপির সাহায্যে ভাব আদান-প্রদানের দক্ষতা বাড়ান, মিউজিক থেরাপি ও ম্যাসাজ এই প্রবণতা দূর করার সহায়ক হতে পারে। এই রোগ সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে বড় দায়িত্ব নিতে হয় মূলত বাবা-মা বা রোগীর সহচার্যে থাকা সকলকেই। রোগীকে ক্ষেত্রনুযায়ী উপযুক্ত কথা বলা শেখানো, সামাজিক মেলবন্ধন তৈরি করার প্রবণতা বাড়ানো, কথা বলার কৌশল ও বলার সময় মুখের ভঙ্গিমা ঠিক করার কৌশল নিবিড়ভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শারীরিক, সামাজিক, ব্যবহারিক শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এই রোগ সম্পূর্ণভাবে ঠিক করা যায়না। তবে পারস্পারিক সহযোগিতা, বোঝাপড়া এবং সঠিক প্রশিক্ষণ রোগীকে দীর্ঘসময় সুস্থ ও উন্নত জীবনযাপন করতে সাহায্য করে।
by alamgir alam | Jun 28, 2020 | স্বাস্থ্য টিপস্
ফল খাওয়া নিয়ে নানা জনের নানা মত। কেউ বলছেন, খালি পেটে পানি আর ভরা পেটে ফল খেতে হয়। আবার কেউ বলেন, সন্ধ্যার আগে ফল খেয়ে নেওয়া উচিত। এমন নানা মতে স্বাভাবিকভাবেই বিভ্রান্ত আপনি। কোনটা শুনবেন আর কোনটা শুনবেন না! তার চেয়ে জেনে নিন পুষ্টি বিজ্ঞানীরা কী বলছেন।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের কথায়, ফল মানেই প্রচুর প্রাকৃতিক ভিটামিন, মিনারেলস আর ফাইবারের আকর। তাই প্লেটের অর্ধেকটা যদি ফল আর অর্ধেকটা সবজিতে ভরা থাকে তাহলে এমনিতেই পেট ভরবে এবং ভরা পেটে না খালি পেটে ফল খাবেন সেই দ্বন্দ্বও থাকবে না। খবর এনডিটিভি’র।
এছাড়াও পুষ্টিবিজ্ঞানীদের দাবি, খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে যদি কয়েক টুকরো ফল খেয়ে নেওয়া যায় তাহলে বেশি খাওয়ার সমস্যা থেকে আপনি রেহাই পাবেন। বাঁচবেন ওবেসিটির ঝামেলা থেকেও।
তবে যেসব ফলে শর্করা বা চিনির মাত্রা বেশি সেগুলি খাবার পাতে খাওয়া উচিত নয়। এতে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর সব সময়েই ফল ও খাবার খাওয়ার মধ্যে কম পক্ষে আধ ঘণ্টা ফারাক রাখা উচিত। না হলে খাবার বা ফল কোনোটাই হজম হবে না। কারণ ফল নিজেই একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ খাবার।
কখন ফল খাওয়া উচিত?
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, সকালে উঠে এক গ্লাস পানির পর ফল খেলে শরীর দূষণমুক্ত হবে। হজম ক্ষমতা বাড়বে। আরও বেশি পুষ্টি পাবেন আপনি। তবে সাধারণত সকালের ব্রেকফাস্ট আর দুপুরের খাওয়ার মাঝের সময়ে ফল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া বিকেলে বা সন্ধেয় স্ন্যাকস হিসেবেও ফল বেছে নিন। অর্থাৎ সন্ধ্যার পর ফল খাওয়া যেতেই পারে।
এছাড়া খাওয়ার আগে কয়েক টুকরো ফল খেলে পাকস্থলীতে ফাইবার যায়। যা অন্য খাবার হজম করতে সাহায্য করে। আবার পেটও ভর্তি রাখে। বেশি ফাইবার যুক্ত ফল হল আপেল, ন্যাসপাতি, কলা।
তবে রাতে খাওয়ার পর ফল না খাওয়াই ভালো। কারণ ফলের মধ্যে থাকা চিনি শরীরে বাড়তি এনার্জি জুগিয়ে ঘুমের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তাই শোওয়ার অন্তত ঘণ্টা দুই আগে ফল খেতেই পারেন।
এমএস/এসি